ওসমান আলী, নবাবগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
শরৎ নিয়ে বহু কবিতা ও গান রচিত হয়েছে। শরতের নীল আকাশে ভেসে বেড়ায় সাদা মেঘের ভেলা। এখন শরৎকাল, দেশের অনেক জায়গায় শরতের নান্দনিক সৌন্দর্য দেখা যাচ্ছে। তেমনই দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার কাঁছদাহ ব্রিজের পাশে করতোয়া নদীর পাড়ে কাশফুলে ছেয়ে গেছে। অনেকেই ছুটছেন সেখানে প্রকৃতির বুকে শ্বাস নিতে।
সবুজ-শ্যামল প্রকৃতির রাজ্য দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলা। আর এই উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদীর পাড়ে ফুটেছে হাজার হাজার কাশফুল। নদীর পাড়ে মাথা উঁচু করে দোল খাচ্ছে শুভ্র এই কাশফুল। সেখানে প্রাকৃতিক নিয়মেই তৈরি হয়েছে কাশফুলের বাগান। নজরকাড়া কাশফুলের হাতছানি মানুষের মনকে ভীষণভাবে টেনে নিয়ে যায়।
কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পর্যটকেরা প্রতিনিয়ত ভিড় জমাচ্ছে সেখানে। যান্ত্রিক নাগরিক জীবনের একঘেয়েমি কাটানোর জন্য এই কাশফুলের সান্নিধ্যে আসেন বহু মানুষ। কাশফুলের শুভ্রতা মনকেও শুদ্ধ করে দেয়।সেখানে ছবিও তুলছেন অনেকে, কেউ বন্ধুদের সাথে আবার কেউ পরিবারের সাথে।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রতি বছর কাশফুল ফুটলেও এবার কাশফুলের উপস্থিতি গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। আর সেই কাশফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতেই দলে দলে ছুটে আসছেন মানুষেরা। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে দুপুর গড়ালেই মানুষ যেন উপচে পড়তে থাকে।
স্থানীয় স্কুল ছাত্র আহসান হাবিব জানান, প্রতিদিনের যে চাপ তাতে এক ঘেয়েমি চলে আসে। একটু মুক্ত বাতাস পেলে ভালো লাগে। তাই একটু ছুটে এসেছি। কাশফুল দেখে খুব ভালো লাগছে। নদীর পাড়ে বিভিন্ন স্থানে কাশফুল ফুটেছে। সবগুলো জায়গাই ঘুরে দেখছি।
বুলবুল আহমেদ ও মোস্তফা কামাল নামে দুই দর্শনার্থী বলেন, আমার শখ ঘোরাঘুরি করা। আমি ঘুরতে ভালোবাসি। কাশফুল সাধারণত গ্রামেই বেশি দেখা যায়। কিন্তু এখন শহরেও বিভিন্ন স্থানে কাশফুল ফুটছে। প্রতিদিনের ক্লান্তি কাটাতে এসব জায়গায় এসে একটু প্রশান্তি পাওয়া যায়। এই জায়গাগুলো আমাদের বিনোদন স্পট হিসেবেও কাজ করছে। খুবই চমৎকার পরিবেশ। বন্ধুবান্ধব নিয়ে ছবি তুলছি, সুন্দর সময় কাটাচ্ছে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ সোম জানান, নবাবগঞ্জ উপজেলা একটি পর্যাটন এলাকা এখানে একটি জাতীয় উদ্যান, একটি পিকনিক স্পর্ট রয়েছে। তার পাশাপাশি প্রতিবারের ন্যায় এ বছরও উপজেলার কাঁচদহ ব্রিজের পাশে করতোয়া নদীর পাড়ে ফুটেছে কাশফুল। এজন্যই সেখানে অনেক দর্শনার্থীরা ভীর করছেন। কাশফুল বাগানে কেউ বন্ধু আবার কেউ পরিবার নিয়ে ঘুরছেন। প্রয়োজন হলে সেখানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নদীর ধার, জলাভূমি, চরাঞ্চল, শুকনো এলাকা, পাহাড় কিংবা গ্রামের কোনো উঁচা জায়গায় কাশের ঝাড় বেড়ে ওঠে। বাংলা সাহিত্যে কাশবনের বহু বর্ণনা পাওয়া যায় কাশফুলের জাত ভাইয়ের নাম কুশ। উল্লেখ্য যে, সাহিত্যে কাশফুলের কথা নানাভাবে এসেছে। রবীন্দ্রনাথ প্রাচীন গ্রন্থ কুশজাতক কাহিনি অবলম্বন করে শাপমোচন নৃত্যনাট্য রচনা করেছেন।